Back to Posts

উপদেশ কিংবা পরামর্শ

উপদেশ কিংবা পরামর্শ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু আজকাল এই উপদেশ কিংবা পরামর্শ নিতান্তই বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে যার ফলে এই উপদেশ এবং পরামর্শ ফলপ্রসূ হচ্ছে না।  আসুন একটু রুটকজ এনালাইসিস করে দেখি যে কেন আমাদের উপদেশ এবং পরামর্শগুলো কার্যকর হচ্ছে না? 

Example-1:  আমরা যখন কোন জ্বরের রোগীকে ঔষধ সেবনের জন্য ফার্মেসিতে নিয়ে যাই তখন ফার্মাসিস্ট বা ওষুধ বিক্রেতা তিনি নাপা, ডুয়েট কিংবা প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ দিয়ে দেবে আর যখন আমরা কোন অবিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাবো তখন তিনি রোগীর ব্লাড টেস্ট করবে আরো আনুষাঙ্গিক চেকাপ করবে, করার পরে রিপোর্ট দেখবে, রিপোর্ট দেখার পরে তার যদি কোন সন্দেহ হয়, সে পুনরায় আবার রিপোর্ট করতে পারে, এভাবে এনালাইসিস করার পরে তিনি কিছু মেডিসিন লিখে দিবেন। তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে সবাই জ্বরের রোগী কিন্তু একেকজনের সমস্যা একেক রকম ও ভিন্ন তাই একমাত্র বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগন রোগের ধরন অনুযায়ী ঔষধ দিয়ে থাকেন। অন্যথায় একজন ফার্মাসিস্ট কিংবা ওষুধ বিক্রেতা কেবল আন্দাজ ও অনুমানের উপর ভিত্তি করেইবঔষধ দিয়ে থাকেন যা কার্যকর হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
Example- 2: কবি নজরুলের লেখা এবং কবি রবীন্দ্রনাথের লেখা দুইজন দুই ধারায় লিখেছেন তাদের একজনের সাথে আরেকজনের তেমন মিল  খুঁজে পাওয়া যায় না। নজরুল গীতি ও রবীন্দ্র সংগীতের সুর, তাল ও লয় আলাদা। কবি নজরুল কখনো রবীন্দ্রনাথ হবে না আবার কবি রবীন্দ্রনাথ  কখনো নজরুল হবেনা, এটাই কিন্তু স্বাভাবিক কারন তারা ব্যক্তিগত জীবনে যা উপলব্ধি করেছে তাই লেখালেখির মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। 
Example -3 : শিল্পী রুনা লায়লার গান আর মনির খানের গানের মধ্যে যথেষ্ট পরিমান ভিন্নতা রয়েছে একজন চাইলেও আরেক জনের সুর নকল করে ২/১ টি গানের বেশি গাইতে পারবে না, স্বভাবতই তাদের নিজস্ব সুরের ভাবধারা চলে আসবে। তার মানে তারা উভয় নামীদামী শিল্পী কিন্তু গানের কথা ও সুর ভিন্ন। তাই তারা যখন কাউকে গান শেখাবে তাদের নিজস্ব স্বকীয়তায় শেখাবে। রুনা লায়লা কখনো মনির খানের সুর শখাবে না আবার মনির খানও রুনা লায়লার সুর শেখাবে না। তাই বাস্তব জীবনে প্রতিটি মানুষই তাদের নিজের জীবন থেকে উপলব্ধি নিয়ে অন্যকে উপদেশ কিংবা পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্র আপনার পরামর্শ অন্যের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে কারন আপনার সমস্যা ও উপলব্ধি অন্যের জন্য অনুরুপ নয়। 
আমরা একটা জিনিস ক্রিটিক্যাল এনালাইসিস করে দেখতে পারি যে আমাদের পরামর্শগুলো কেন আজ কাল ইফেক্টিভ হচ্ছে না। কারণটা হচ্ছে আমরা বেশিরভাগ সময়ই প্রয়োজনের বেশি পরামর্শ দিয়ে থাকি অথবা ভুল পরামর্শ দিয়ে থাকি যার কারনে আমাদের পরামর্শ শ্রোতারা গ্রহণ করছে না। আমরা যে সকল পরামর্শগুলো দিয়ে থাকি তা দুই ভাগে বিভক্ত সুপরামর্শ এবং কুপরামর্শ। বেশিরভাগ মানুষই আমরা সুপরামর্শ দিয়ে থাকি তাহলেতো পৃথিবী আমুল পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না। কেননা পরামর্শ দেওয়ার পরও প্রায় ৯৫% লোক এ পরামর্শ গ্রহণ করছে না তার মানে হচ্ছে আমরা যে পরামর্শ দিচ্ছি তা তার জন্য সে উপযুক্ত মনে করেনি বিধায় সে পরামর্শ গ্রহণ করেনি। অতএব উপদেশ কিংবা পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে একজন অবিজ্ঞ ডাক্তারের ভুমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় ফার্মাসিস্টের মত রুগী মারা যাবে আর এটাই হচ্ছে বর্তমান সমাজের অবস্থা। রুগীর চেয়ে ডাক্তার বেশি, মানে পরামর্শ দাতার অভাব নেই। মনে রাখবেন আপনার পরামর্শে কারো ক্ষতি হলে তার জন্য আপনি দ্বায়ী থাকবেন। অর্থাৎ যে বিষয়ে আপনার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে নাক গলানো উচিৎ নয়। 

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to Posts